ঘড়ি কে তৈরী করেন?

কে কখন ঘড়ি আবিস্কার করেছিল তা ইতিহাসে পাতায় কোথাও লেখা নেই । তবে এর পিছনে আছে তিন হাজার বছরের ইতিহাস। ওই সময়ে মিশরীয়রা আবিস্কার করল জমি মাপজোক করার পদ্ধতি আর মাপজোক সন্মন্ধ্যে তাদের মধ্যে ধারনা জন্মে গেল সময়কেও তারা পরিমাপ করতে চাইল। আসল ‘সূর্য ঘড়ি’ বা ‘ছায়া ঘড়ি’। ‘সূর্যঘড়ি’ বানাতে তখন মানূষ একটা লাঠি পূতে রাখল খোলা জায়গায়। তারপর সেই লাঠিকে ঘিরে ছোট বড় নানা চক্র দিয়ে দেয়। চক্রর ওপর লিখে রাখে বিভিন্ন সংকেত যা দিয়ে নানা প্রহর বুজায়। লাঠির ওপর সূর্যের আলো পড়লে সেই আলো পড়তো মাটিতে সেখান থেকে সংকেত নির্দেশিত চক্রে আর সেখান থেকে সময় নির্ধারন হত। এমন একটি ঘড়ি আজো বার্লিন মিউজিয়ামে রক্ষিত।
দিনের বেলা না হয় সূর্যের আলো দেখে সময় পাওয়া গেল কিন্তু রাতের বেলা কিভাবে সময় পাওয়া যাবে ভাবিয়ে তুলল মানূষকে। চোখ গেল রাতের আকাশে। তারা রাতের আকাশে এমন এক নক্ষত্রের সন্ধান করতে লাগল যা সব সময় এক দিক থেকে অন্যদিকে যাবে। অবশেষে পাওয়া গেল। দেখতে খুব উজ্জল আর একটু লম্বা। এটা আকাশের উত্তর দিকে ওঠে আর ধীরে ধীরে দক্ষিন দিকে এগিয়ে যায়, শুধু তাই না তারা মেরু কে কেন্দ্র করে ঘড়ির কাটার মত ঘুরতে থাকে যা দিয়ে অনায়াসে সময় নির্ধারন করা যায়। এর নাম ‘ক্যাসিওপিয়া’। দেখতে অবিকল ইংরেজী W অক্ষরের মত। এই ‘তারাঘড়ি’ প্রথম আবিস্কার করে জার্মানরা। তারা ঘড়ির পর আসে ‘পানিঘড়ি’। খ্রীষ্ট পূর্ব ১৪০০ সাল নাগাদ মিশরীয়রা প্রথম পানি ঘড়ি আবিস্কার করেন । একটি ফানেলের মধ্যে পানি ভরা হল, সেই ফানেলের নীচে লাগানো হল এক সরু পাইপ। ফানেলের পানি এক সরু পাইপ বেয়ে যেয়ে পড়ত একটি জারে। সেই জারের মধ্যে একটা হাল্কা কর্ক রেখে দিত তারা। পাত্রের অপর প্রান্তে লাগিয়ে দেয়া হত দাত যুক্ত একটা সময় নির্দেশক কাটা। ফানেল থেকে ধীরে ধীরে পানি চলে আসত জারে, জারে যত পানি পড়ত কর্ক ততই ভেসে উঠত। সেই সঙ্গে সময় নির্দেশক কাটা ঘুরতে আরম্ভ করত। যা বলে দিত সময়। গ্রীকরা একে বলত ‘ক্লিপসেড্রা’। এরপর এল ‘বালুঘড়ি’। প্রায় বারোশ বছর আগে এর প্রচলন শুরু হয়। বালু ঘড়ি ছিল কিছুটা পানি ঘড়ির মত। তবে এ ঘড়ির জন্য প্রয়োজন হয় একটা ফানেল যার মাজখানটা চ্যাপ্টা। এবার ফানেলের ওপর দিয়ে কিছুটা বালি ফানেকের মধ্যে ঢেলে দিল, সেই বালি ফানেলের মাঝখানে যেয়ে বাধা পেল। অপেক্ষাকৃত সরু ও মিহি দানার বালি ফানেলের চ্যাপ্টা অংশ দিয়ে নিচে পড়া শুরু হল। ফানেলের নীচের অংশে আকা থাকত স্কেল। বালুর জমা হবার পরিমান নির্নয় করত নির্দিষ্ট সময়। রাতের বেলা মানূষ ঘড়ির বিকল্প হিসাবে মানূষ আবিস্কার করে ফেলল ‘মোমঘড়ি’। চীন দেশেই প্র থম আবিস্কার হয় ‘মোম ঘড়ি’। সূর্য ঘড়ির পদ্ধতিতে এই ঘড়ি তারা ব্যাবহার করত। অন্ধকার ঘরে তারা একটা মোমবাতি জ্বালাত। সেই আলোর কাছাকাছি তারা রেখে দিত কোন মানদন্ড। মোমের আলো গিয়ে পড়ত সেই মানদন্ডে। মানদন্ডের সামনের অংশ আলোকিত হত আর পিছনের অংশে পড়ত তার ছায়া। মোম যত ছোট হত ছায়া তত দীর্ঘ হত। এই ছায়া পরিমাপ করে মানূষ সময় পরিমাপ করত। যন্ত্র ঘড়ি কে আবিস্কার করেন তা অজানা, তবে অনেকে মনে করেন আর্কিমিডিসের হাতে প্রথম যন্ত্র ঘড়ি জীবন পায়। যেটুক তথ্য এই মুহুর্তে আছে তাতে জানা যায় ‘গ্রেটটম’ নামে ১২৮৮ সালে একটি ঘড়ি তৈরী হয়েছিল লন্ডনে। ফ্রান্সের রাজা চার্লস ডি র জন্য ১৩৬০ সালে একটি ঘড়ি তৈরী হয়েছিল যা আজো সচল। আমেরিকায় প্রথম ফিউজ স্পন্সর তৈরী করেন হাত ঘড়ি। বর্তমানে পারমানবিক ঘড়ি আছে যে ঘড়ি সেকেন্ডের দশ কোটি ভাগের এক ভাগ ও সময় হের ফের করেনা। এ রকম দুটি ঘড়ি আছে ইউ এস এন বি এস ল্যাব্রেটরিতে।

11 thoughts on “ঘড়ি কে তৈরী করেন?

  1. কাজী মাছাবুর রহমান। says:

    সত্যিই চমৎকার ।
    এই রহস্য ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *